Last Updated on
প্রথমে আপনাকে একজন প্রফেশনাল রিয়েল এস্টেট কনসালটেন্ট বা পরামর্শক এর সাথে যোগাযোগ করতে হবে। আপনি অবশ্যই অবগত আছেন যে, রিয়েল এস্টেট সেক্টরটি অনেকগুলো বিষয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত যেমন : জমির লিগ্যাল ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন ,মিউটেশন ,খাজনা,সিটি জরিপ ,প্ল্যান অ্যাপ্রভাল, ডিজাইন অ্যান্ড ড্রয়িং, ফ্লোর লে আউট ,হেবি এন্ড লাইট ইকুপমেন্ট ইনস্টলেশন(লিফট, জেনারেটর, পাম্প,সাব-স্টেশন, ইন্টার কম,ফায়ার এক্সটিংগুইশার) ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড, রাজউক ফিউচার প্ল্যান ও অন্যান্য । তাই যে কারো পক্ষে এই সবগুলো বিষয় অল্প সময় মধ্যে জানাশুনা করা সম্ভব হয়ে ওঠে না ।একজন কনসালটেন্ট আপনাকে রিয়েল এস্টেট এর সবগুলো বিষয়ের সাথে পরিচয় করে দিয়ে আপনার সময় ও টাকার অপচয় থেকে রক্ষা করে থাকেন।সর্বোপরি তিনি আপনার বাজেটের মধ্যে বাজারের সবচেয়ে ভালো ফ্ল্যাটটি পেতে সহযোগিতা করতে পারবেন ।
কিন্তু বেশিরভাগ সময় দেখা যায় কোন ব্যক্তি ফ্ল্যাট কেনার সিদ্ধান্ত নিলে প্রথমে উনার পরিচিত কোন আত্মীয় স্বজন বা বন্ধু বান্ধবের কাছে যোগাযোগ করেন ,যে পূর্বে ফ্ল্যাট ক্রয় করেছে।এক্ষেত্রে যে সমস্যাটা হয়, পূর্বে ফ্ল্যাট ক্রয় কৃত ব্যক্তি যে সকল ভুল করেছেন আপনিও একই ধরনের ভুল করার সম্ভাবনা থাকে। কারন উনি যত টুকু জানেন তত টুকুই আপনাকে জানাতে বা বুঝাতে সক্ষম হবেন । কাজেই একজন কাস্টোমারকে ফ্ল্যাট ক্রয়ের কনসালটেন্ট হিসেবে বিবেচনা করাটা সঠিক হবে না ।
অনেকে ফ্ল্যাট কেনার পূর্বে একজন আইনজীবির পরামর্শ নিয়ে থাকেন।ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশনের জন্য অবশ্যই একজন ল্যান্ড বা ভূমি আইনজীবির সাথে যোগাযোগ করা দরকার । তবে একজন আইনজীবী ফ্ল্যাট ক্রয়ের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র লিগ্যাল ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন বিষয়ে সহযোগিতা করতে পারবেন । কিন্তু উনার পক্ষে ড্রয়িং এন্ড ডিজাইন, কার্পেট এন্ড কমন এরিয়া ক্যালকুলেশন , লে আউট ডিটেলস, ইলেকট্রিক্যাল ডিমান্ড লোড ক্যালকুলেশন, প্লাম্বিং সলোশন,মার্কেট রিচার্জ,ফ্ল্যাট ভ্যালুয়েশন ,ফোর্স ভ্যালু,ফায়ার সেফটি সিস্টেম, ডেভলপার রিপুটেশন,রাজউক ডেভলাপমেন্ট প্ল্যান ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে ভালো পরামর্শ দিতে সক্ষমতা থাকার কথা না ।কাজেই একজন আইনজীবী ও আপনাকে সবগুলো বিষয় ভালো ধারনা দিতে পারবেন না ।
তেমনি ভাবে একজন আর্কিটেকচার, ইঞ্জিনিয়ার,ব্যাংকার অথবা রিয়েল এস্টেট জব হোল্ডারের নিজ নিজ সেক্টরে ভালো দক্ষতা থাকলেও রিয়েল এস্টেট এর সবগুলো বিষয় সম্পর্কে ভালো ধারণা নাও থাকতে পারে । যদি না তিনি এই সবগুলো বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেন ।তাই সবগুলো বিষয়ে ভালো ভাবে জানাশোনা আছে আছে এমন একজন ব্যক্তিকে আপনার ফ্ল্যাট কেনার জন্য পরামর্শক হিসেবে বাছাই করুন ।কারণ ফ্ল্যাট ক্রয় করা হচ্ছে জীবনে অন্যতম বড় ধরনের ইনভেস্টমেন্ট।আর যদি এমন হয় আপনি জীবনে প্রথমবারের মতো ফ্ল্যাট ক্রয় করতে যাচ্ছেন সেক্ষেত্রে অবশ্যই জরুরী ভিত্তিতে একজন ভালো পরামর্শকের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন ।
একজন রিয়েল এস্টেট পরামর্শক বা কনসালটেন্ট এর সাথে যোগাযোগ করে আপনি ফ্ল্যাট সম্পর্কে সকল বিষয় জানার চেষ্টা করবেন এবং ফ্ল্যাট কেনার জন্য যে সকল বিষয় লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন তার একটি চেকলিস্ট কালেকশন করবেন। তারপর চেকলিস্ট এর সকল বিষয় পরামর্শক এর মাধ্যমে আয়ত্ত করে নিবেন ।একজন রিয়েল এস্টেট কনসালটেন্ট আপনার ডিমান্ড ,বাজেট ,লোকেশন ও অন্যান্য বিষয়ের উপর ডিপেন্ড করে পরামর্শ দিয়ে থাকেন । চেকলিস্ট এর বাহিরেও অনেক কিছু থাকে যা আপনাকে কনসালটেন্ট নোট করে দিবেন।আপনি ফ্ল্যাট সম্পর্কে বেসিক ধারণা গুলো জানার পর আপনার বাজেট ও পছন্দের লোকেশান অনুযায়ী কনসালটেন্ট এর সহযোগিতা নিয়ে ফ্ল্যাট সার্সিং তালিকা রেডি করুন।এই তালিকায় প্রতিটি ফ্ল্যাটের সাইজ,হ্যান্ড ওভার ডেইট, ডেভেলপার এর নাম অথবা ফ্ল্যাট মালিকের নাম,আসকিং প্রাইস ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় লিপিবদ্ধ থাকবে ।তারপর প্রতিটি ফ্ল্যাটের নির্মাণ খরচ ও বর্তমান ভ্যালুয়েশন কনসালটেন্ট- এর মাধ্যমে জেনে নিবেন ।ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে যে সকল ধাপ রয়েছে তা প্রত্যেকটি কনসালটেন্ট এর সহযোগিতায় ভালো ভাবে অনুসরণ করার চেষ্টা করুন। যে এলাকাতে ফ্ল্যাট ক্রয় করার চিন্তা করেছেন সেই এলাকাতে প্রেজেন্ট মার্কেট রেইট ও রাজউকের কী কী ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আছে তা কনসালটেন্ট এর কাছ থেকে ভালোভাবে জেনে নেবেন।তারপর কনসালটেন্টের পরামর্শ অনুযায়ী যে সকল ডকুমেন্ট(জমির দলিল, মিউটেশন, সিটি জরিপ, রাজউক প্লান অ্যাপ্রভাল,পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি) ভেরিফিকেশন করা দরকার তা কোন লিগেল ফার্মের মাধ্যমে ভেরিফিকেশন করে নিবেন। এক্ষেত্রে আপনি যে রিয়েল এস্টেট কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হতে যাচ্ছেন অথবা যে ব্যক্তির কাছ থেকে ফ্ল্যাটটি কিনতে যাচ্ছেন তাদের পূর্ববর্তী কোন প্রকার দুর্নাম অথবা অন্য কোন আইনী জটিলতা আছে কিনা তা জেনে নেওয়া দরকার এবং তাদের হ্যান্ড ওভার প্রজেক্ট গুলো নিজের চোখে দেখে নিবেন। প্রয়োজনে তাদের কাছ থেকে ফ্ল্যাট কিনেছে এমন ক্রেতার সাথে যোগাযোগ করবেন ।চূড়ান্তভাবে কোন চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পূর্বে আরো সপ্তাহ খানেক সময় নিয়ে যে কোম্পানি বা যার কাছ থেকে ফ্ল্যাট কিনতে যাচ্ছেন তার সম্পর্কে ভালো ভাবে যাচাই-বাছাই করে বিশ্বস্ত রেফারেন্সের মাধ্যমে অগ্রসর হবেন ।
তারপর কনসালটেন্ট এর মাধ্যমে আপনার এবং ডেভেলপার কোম্পানির বা ফ্ল্যাট মালিকের চুক্তিনামাটি ভালো ভাবে পরীক্ষণ করতে হবে।এই চুক্তিনামায় আপনার যাবতীয় সবকিছু লিপিবদ্ধ থাকব । বিশেষ করে আপনি কোন ফ্লোরে কত স্কয়ার ফিট কিনছেন, প্রতি স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাটের দাম , ফ্ল্যাট ক্রয়ের বর্গফুটের অনুপাতিক হারে কত অযুতাংশ ল্যান্ড পাবেন,কমন স্পেইস ও অন্যান্য বিষয়। এছাড়াও অনেক গুলো বিষয় উল্লেখ থাকতে হবে যেমন, যদি কোন কারণে আপনি কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন তাহলে রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ১৭ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী পরিশোধিত অর্থের ১০% অর্থ কর্তন পূর্বক অবশিষ্ট অর্থ ক্রেতাকে (আপনাকে)৩ (তিন) মাসের মধ্যে এককালীন চেক বা পে-অর্ডারের মাধ্যমে ফেরত প্রদান করিতে হবে।আর একটা বিশেষ বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে কোম্পানি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফ্ল্যাট বুঝিয়ে না দিলে অতিরিক্ত সময়ের জন্য আপনাকে মাসে কত টাকা করে জরিমানা দিবে ।কাজেই চুক্তিনামাটি অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে ।ডেভলপার কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর মাঝে মাঝে সাইট ভিজিট করে কাজের অগ্রগতি দেখতে হবে ।সম্ভব হলে অন্যান্য ফ্ল্যাট ক্রয় কৃত ব্যক্তি এবং জমির মালিকের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করবেন। আপনি যে ফ্ল্যাটটি কেনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন উক্ত ফ্লাটটি ডেভেলপার কোম্পানির বিক্রয় করার অনুমতি আছে কিনা তা পাওয়ার অফ এটনী ও রাজউক প্লান অ্যাপ্রভাল এর মাধ্যমে জানতে পারবেন।প্রতিটি কিস্তির মানি রিসিট গুলি অবশ্যই সংরক্ষণ রাখবেন ।ফ্ল্যাটের কাজ ফিনিশিং এর পূর্বে যদি কোন এডিশনাল কাজ করাতে চান তবে তা ডেভেলপার কোম্পানির সাথে আলোচনা সাপেক্ষে করতে হবে। ডেভেলপার কোম্পানির সাথে চুক্তিনামা ও বুশিয়ার অনুযায়ী টাইলস, মার্বেল ,সিপি ফিটিং এবং ইলেকট্রিক্যাল পার্স ঠিকমতো ব্যবহার করছে কিনা তা লক্ষ্য রাখতে হবে ।এছাড়া আপনার ফ্ল্যাটে ইলেকট্রিক লোড কত ডিমান্ড করছে এবং কত ডেভলপার সাপ্লাই দিচ্ছে এই বিষয়টা জেনে নেওয়া প্রয়োজন । শেষ কিস্তি দিবার পূর্বে চুক্তিনামা অনুযায়ী কার্পেট স্পেইস ও কমন স্পেইস ঠিক আছে কিনা পরিমাপ করে নিবেন।কার্পেট এরিয়া কম বেশি হলে ফাইনাল পেমেন্টে অ্যাডজাস্ট করে নিতে হবে। ফাইনাল পেমেন্ট প্রদান কালে অবশ্যই ফ্ল্যাটের চাবি বুঝে নিবেন। ফাইনাল পেমেন্ট দেওয়ার পূর্বে আপনাকে আবার ফ্ল্যাটের সবগুলো বিষয় চুক্তি অনুযায়ী পেলেন কিনা তা কনসালটেন্ট এর মাধ্যমে জেনে নিবেন ।এই সময় আপনাকে অবশ্যই হ্যান্ডওভার সার্টিফিকেট এবং ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ডেভেলপার কোম্পানি থেকে বুঝে নিতে হবে। বিশ্বের অনেক দেশে ৩০% বা ৪০% পেমেন্ট করার পর ক্রেতা ফ্ল্যাটের চাবি বুঝে নিয়ে ব্যবহার করতে পারে। আমাদের দেশে ইদানীংকালে কিছু কোম্পানি এ সুবিধা দিচ্ছে । তবে এই সুবিধা দেওয়ার বিনিময় ডেভলপার কোম্পানী কেমন সুবিধা নিচ্ছে আপনাকে এই বিষয়ে সচেতন থাকা প্রয়োজন।
সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধের পর ডেভেলপার কোম্পানিকে অবশ্যই অনূর্ধ্ব ৩( তিন )মাসের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে দিতে হবে। যা রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ৯ নং অনুচ্ছেদের ১ নং উপ-ধারায় স্পষ্ট ভাবে বর্ণনা আছে ।
ডেভেলপার কোম্পানি থেকে ফ্ল্যাট কিনলে প্রত্যেকেই নিজেদের ফ্ল্যাট নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, যে কারণে কমন স্পেস এ যে সব গুরুত্বপূর্ণ হেভি এবং লাইট ইকুইপমেন্ট (লিফট, জেনারেটর, ওয়াটার পাম্প,সাবস্টেশন, ফায়ার সেফটি সিস্টেম ও ইন্টার কম) ইনস্টলেশন করা হয় তা অনেকেই লক্ষ্য রাখেন না।অনেকে মনে করেন জমির মালিক এই সকল দায়িত্ব পালন করবেন কিন্তু জমির মালিক এই বিষয়ে সচেতন না হলে অথবা দেশের বাইরে থাকলে অনেক ডেভেলপার কোম্পানি গুলো এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী ইনস্টলেশন করে না ।যে কারনে প্রত্যেক ফ্ল্যাট মালিকরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হন।
যেমন ধরুন,জমির মালিকের সাথে ডেভেলপার কোম্পানি চুক্তি ছিল (০৮) আট জন বিশিষ্ট আই.জি.ভি ব্যান্ডের ইটালির লিফট দিবে। কিন্তু দেখা গেল একটি সাধারণ মানের (০৬) ছয় জন বিশিষ্ট চায়না কোম্পানির লিফট ইনস্টলেশন করল।সুপ্রতিষ্ঠিত ডেভলপার কোম্পানী গুলো সাধারণত এই ধরনের অনিয়ম খুব বেশি পরিলক্ষিত হয় না। তবে বিগত দিনে অনেক ছোট ও মাঝারি ডেভেলপার কোম্পানি গুলো এ ধরনের অনিয়ম করতে দেখা গেছে ।তাই এই সব হেভি ইকুইপমেন্ট ইনস্টলেশন করার পূর্বেই ফ্ল্যাট ক্রয় করতে চুক্তিবদ্ধ ব্যক্তিবর্গ এবং জমির মালিক ডেভেলপার কোম্পানির দায়িত্বশীল ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করে এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী সবকিছু বুঝে নিতে হবে।
সম্পূর্ণ প্রজেক্ট হ্যান্ড ওভার নেওয়ার পূর্বে অবশ্যই প্রত্যেক ফ্ল্যাটের মালিক গন এবং জমির মালিক কে ফায়ার সেফটি সিস্টেম সম্পর্কে ডেভলপার কোম্পানী থেকে বুঝে নিতে হবে । হাই রাইজ বিল্ডিং এর জন্য অবশ্যই ফায়ার এক্সিট সিঁড়ি থাকতে হবে এবং প্রত্যেক ফ্লোরে সিঁড়িতে দুইটি করে ফায়ার এক্সটিংগুইশার মজুদ রাখা দরকার। ফায়ার এক্সটিংগুইশার দুই প্রকার হয় ১।এ.বি.সি ড্রাই পাউডার (ABC dry powder) ২। কার্বন ডাই অক্সাইড(Co2)। ফায়ার এক্সিট ডোর এমন হতে হবে যা ভিতর থেকে বাহির হওয়া যাবে কিন্তু বাহির থেকে ভিতরে প্রবেশ করা যাবে না। অনেক সময় দেখা যায় ফ্ল্যাট বসবাস করি অনেক ব্যক্তিবর্গ ফায়ার এক্সিট সিঁড়িতে পরিত্যক্ত আসবাসপত্র ও ঘরের অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ইত্যাদি দিয়ে আবদ্ধ করে রাখেন, যা জরুরী প্রয়োজনে চলাচল করতে অসুবিধা হয়। ফায়ার এক্সটিংগুইশার প্রতি(০১) এক বছর পর পর নতুন করে রিফিল করতে হবে নতুবা এর কোনো কার্যকারিতা থাকবে না। হাই রাইজ বিল্ডিং গুলোতে ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড অনুযায়ী ফায়ার হাইড্রেন , হোস পাইপ, স্মোক ডিটেক্টর, ফায়ার এলাম ও স্প্রিংকলার সিস্টেম এর ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং এগুলো কে কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তা ইনস্টলেশনের সময় ফ্ল্যাট মানিকগন ও ফ্ল্যাট মেনটেনেন্স করার ব্যক্তিবর্গ শিখে নেওয়া প্রয়োজন। প্রত্যেক ফায়ার হিডেন এবং ফায়ার এক্সটিংগুইশারের গায়ে নিকটস্থ ফায়ার স্টেশনের ইমারজেন্সি কন্টাক্ট নাম্বার ও ন্যাশনাল ইমারজেন্সি নাম্বার (999 ) লিখে রাখা প্রয়োজন।
আপনি যদি কোন ব্যক্তির কাছ থেকে নতুন অথবা সেকেন্ড হ্যান্ড ফ্ল্যাট ক্রয় করে থাকেন সেক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময় দেখা যায় এককালীন অথবা দুই কিস্তির মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করা হয় । এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ টাকা যেদিন পরিশোধ করবেন সেই দিনই রেজিস্ট্রেশন করে নিবেন।ফ্ল্যাট ক্রয় বাবদ সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করার পর আরো কিছু টাকার প্রয়োজন হবে যেমন : সেল পারমিশন, রেজিস্ট্রেশন, ইন্টেরিয়র ডিজাইন ও এডিশনাল ওয়ার্ক ।তবে ইন্টেরিয়র ডিজাইন ও এডিশনাল ওয়ার্ক নির্ভর করছে আপনার প্রয়োজনের উপর।সেল পারমিশন ও রেজিস্ট্রেশনের টাকার পরিমাণ কত হবে তা কনসালট্যান্টের কাছ থেকে বুঝে নিবেন।রেজিস্ট্রেশন এর সময় কোন কোন ডেভেলপার কোম্পানি সার্ভিস চার্জ অনেক বেশি টাকা ধার্য করে থাকে। তাই আপনাকে ডেভেলপার কোম্পানির সাথে প্রথমে ফ্ল্যাট কেনার জন্য যে এগ্রিমেন্ট করবেন সে চুক্তিপত্রে রেজিস্ট্রেশন এর সময় সার্ভিস চার্জ তারা কত নিবে সেটা উল্লেখ রাখতে হবে। নতুবা পরবর্তীতে তারা বেশি টাকা দাবি করতে পারে।
রেজিস্ট্রেশনের পর মানি রিসিট ও সার্টিফাইড কপি সংরক্ষণ করতে হবে ।এই সার্টিফাইড কপির মাধ্যমে মূল রেজিস্ট্রেশনের কপি বছর খানেক পর বুঝে নিবেন। অনেকে এটা ভুল করে অথবা অবহেলা করে সংরক্ষণ করেন না। আপনার ফ্ল্যাটের সকল ডকুমেন্ট কমপক্ষে দুই সেট ফাইলবন্দি করে সংরক্ষণ রাখবেন।প্রয়োজনে ব্যাকআপ হিসেবে সকল ডকুমেন্ট স্ক্যানিং করে গুগল ড্রাইভে রাখতে পারেন। পরবর্তীতে ফ্ল্যাট মিউটেশন, টেক্স অ্যাসেসমেন্ট ,মর্গেজ অথবা বিক্রয় করার জন্য এই সকল ডকুমেন্ট অবশ্যই দরকার হবে ।